
জীবদেহের জিনোমকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজিয়ে বা কোনো নির্দিষ্ট জিনকে অন্য জীবের জিন দ্বারা প্রতিস্থাপন করে কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্যের নতুন জীবকোষ তৈরি করার পদ্ধতি হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।
কোন প্রাণীর কোষে অবস্থিত DNA -তে অনেক জিন থাকে। একটি জিন প্রাণীটির একটি বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে, সুতরাং কোন জিন পরিবর্তন করে সেই প্রাণীর বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করা সম্ভব।
ফসলী শস্যের কোন নির্দিষ্ট জিন অন্য কোন বন্য জাতের জিন দ্বারা প্রতিস্থাপন করে দ্রুত ও অধিক ফলনশীল জাতের শস্য উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। যেমনঃ IR8, IR28, IR29 প্রভৃতি। তাছাড়া রোগমুক্ত ও ভাইরাস প্রতিরোধী শস্য চারা তৈরি, ফসল বা ফলের বর্ণ, গঠন, স্বাদ ও পুষ্টিমান উন্নয়নেও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ড. মাকসুদুল আলম জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তির কল্যানে পাটের জেনোম সিকুয়েন্স আবিষ্কার করেন। ফলস্বরূপ, পাটের জীবন রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।
জীবদেহের জিনোমকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজিয়ে বা কোনো নির্দিষ্ট জিনকে অন্য জীবের জিন দ্বারা প্রতিস্থাপন করে কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্যের নতুন জীবকোষ তৈরি করার পদ্ধতি হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ব্যবহারঃ
উন্নতমানের ফসল উৎপাদনঃ উন্নত জাতের ফসল উৎপাদনে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেমনঃ
- দ্রুত ও অধিক ফলনশীল জাতের শস্য উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।
- রোগমুক্ত ও ভাইরাস প্রতিরোধী শস্য চারা তৈরি করা যাচ্ছে।
- জিন পরিবর্তিত উন্নত শস্য চারা অধিক খরা ও ঠান্ডা সহ্য করতে পারে।
- ফসল বা ফলের বর্ণ, গঠন, স্বাদ ও পুষ্টিমান উন্নয়নে জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করা হচ্ছে।.
রোগের চিকিৎসাঃ জিন থেরাপির মাধ্যমে রোগের চিকিৎসা এবং ত্রুটিপূর্ণভাবে জিন পরিবর্তন করে রোগীকে সুস্থ করে তোলা যায়।
মেডিসিন তৈরিঃ হরমোন, ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য ওষুধ তৈরিতে জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইনসুলিন তৈরিঃ মানবদেহের ইনসুলিন তৈরির জিনকে ব্যাকটেরিয়ার কোষে প্রবেশ করিয়ে ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইনসুলিন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হয়।
জিন থেরাপিঃ জিন থেরাপির মাধ্যমে মানুষের ত্রুটিপূর্ণ জিন পরিবর্তন করে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব।
ক্লোনিংঃ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর কল্যানে ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে নতুন উন্নত প্রাণি, যেমন- গরু, ছাগল, ঘোড়া ইত্যাদি সৃষ্টি হচ্ছে।