
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
প্রশ্ন ১। সিমুলেটর ও মডেলিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ সম্ভব। ব্যাখ্যা কর। [সি. বো, ২৩]
উত্তরঃ সিমুলেটর ও মডেলিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রযুক্তি হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তিতে সিমুলেটর ও মডেলিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে যানবাহন চালানো ও বিমান পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বাস্তবমুখী ব্যবহার হয়ে থাকে ফ্লাইট সিমুলেটরে যেখানে বৈমানিকরা বাস্তবে আসল বিমান উড্ডয়নের পূর্বেই বিমান পরিচালনার বাস্তব জগতকে অনুধাবন করে থাকেন। এছাড়াও মোটরগাড়ি, জাহাজ ইত্যাদি চালানোর প্রশিক্ষণে সংশ্লিষ্ট সিমুলেটর ও মডেলিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ-সংশ্লিষ্ট কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে বাস্তবের ন্যায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।
প্রশ্ন ২। প্রযুক্তির ব্যবহারে মটোর ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব- কথাটি ব্যাখ্যা কর। [ঢা. বো, কু. বো, ব, বো, ‘১৯; রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা; আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা।]
উত্তরঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মটোর ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব। এক্ষেত্রে কম্পিউটার সিম্যুলেশনের মাধ্যমে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য চালককে একটি নির্দিষ্ট আসনে বসতে হয়। চালকের মাখায় পরিহিত হেড মাউন্টেড ডিসপ্লের সাহায্যে কম্পিউটার দ্বারা সৃষ্ট যানবাহনের অভ্যন্তরীণ অংশ এবং আশপাশের রাস্তায় পরিবেশের একটি মডেল দেখানো হয়। প্রশিক্ষণার্থী এ পরিবেশের সাথে একাত্ম হয়ে বাস্তবের ন্যায় মটর ড্রাইভিং কৌশল রপ্ত করতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ এর মাধ্যমে সহজেই ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব হচ্ছে।
প্রশ্ন ৩। বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর। [সি. বো. ‘১৭; আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা।]
উত্তরঃ ‘বাস্তবে অবস্থান করে কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব’- এটি শুধুমাত্র সম্ভব হবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি একটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ যেখানে ব্যবহারকারী ঐ পরিবেশে মগ্ন হতে, বাস্তবে অবস্থান করে কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখতে, সেই সাথে বাস্তবের মতো শ্রবণানুভূতি এবং দৈহিক ও মানসিক ভাবাবেগ, উত্তেজনা অনুভূতি প্রভৃতির অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। মানুষের কল্পনার জগতকে বাস্তবে রূপ দেয় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। কর। কল্পলোকের সব কিছুই এর মাধ্যমে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব। তাই বলা যায়, বাস্তবে অবস্থান করে কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব।
প্রশ্ন ৪। ‘ভার্চুয়াল জগৎ এবং বাস্তব জগৎ সম্পূর্ণ আলাদা’- ব্যাখ্যা কর। [সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম।]
উত্তরঃ প্রকৃত অর্থে বাস্তবে যা ঘটে তাই বাস্তব জগৎ, পক্ষান্তরে বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞান নির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল জগৎ বলে। ভার্চুয়াল জগতে বাস্তবকে শুধু উপলব্ধি করা যায়। যেমন- বাস্তব জগতে মানুষ শূন্যে উড়ে যেতে পারে না, ১২০ তলা ভবন থেকে লাফ দেওয়া কল্পনাও করতে পারে না। কিন্তু ভার্চুয়াল জগতে অর্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে বাস্তব জগৎ তৈরি করে। এসব বিষয়গুলো উপলব্ধি করা যায়, যা বাস্তবে সম্ভব হয় না।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
প্রশ্ন ৫। ‘বর্তমানে ড্রাইভারবিহীন গাড়িতেও যাতায়াত করা যায়’। ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ড্রাইভারবিহীন গাড়ি হলো আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের একটি সফল প্রয়োগ। এ ধরনের গাড়ির সামনের ড্রাইভারের আসনটি খালি থাকে। গাড়ির স্টিয়ারিং তুইল একা একা ঘুরতে থাকে। গাড়ির ক্যামেরা, লেজার রশ্মির লিভার সিস্টেম এবং রাভার থেকে পাওয়া ডাটা ব্যবহার করে গাড়িটি চালায় আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স। বর্তমানে উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের গাড়ির চলাচল শুরু হয়েছে, যার মাধ্যমে সহজেই যাতায়াত করা সম্ভব।
প্রশ্ন ৬। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যাখ্যা কর। [রাজশাহী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বোর্ড ২০১৮]
উত্তরঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বর্তমানে কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা। বৃদ্ধিমত্তা বা চিন্তা করার ক্ষমতা প্রাণীর আছে কিন্তু জড়বস্তুর নেই। তবে বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন প্রচেস্টায় যন্ত্রের মধ্যে চিন্তা করার ক্ষমতা প্রদান করতে সম্ভব হয়েছে। এটিই মূলত আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। অন্যভাবে বলা যায়, মানুষের চিন্তা-ভাবনাগুলো কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটারের মধ্যে রূপ দেওয়াকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে। অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দরুন কম্পিউটারের ভাবনা-চিন্তাগুলো মানুষের মতোই হয়। উদাহরণ হিসেবে রোবটের কথা বলা যায়, রোবটের বুদ্ধি হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিতা।
প্রশ্ন ৭। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এক ধরনের এক্সপার্ট সিস্টেম-বুঝিয়ে লেখ। [ঢাকা, যশোর, সিলেট ও দিনাজপুর বোর্ড ২০১৮; সরকারি ব্রজলাল কলেজ, খুলনা।]
উত্তরঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মানুষের চিন্তাভাবনাগুলোকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটার বা কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রের মধ্যে রূপ দেওয়ার ব্যবস্থা। এক্সপার্ট সিস্টেম হলো এক ধরনের সিদ্ধান্ত সমর্থন পদ্ধতি যা নির্দিষ্ট বিষয়ে মানুষের ন্যায় কৃত্রিম দক্ষতা নিয়ে তৈরি। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অনেকগুলো মাইক্রোপ্রসেসর ও চিপ ব্যবহার করে প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে কম্পিউটারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সৃষ্টি করা হয়। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এক ধরনের এক্সপার্ট সিস্টেম
রোবটিক্স
প্রশ্ন ৮। “ঝুঁকিপূর্ণ কাজ যন্ত্রের সাহায্যে করা সম্ভব- বুঝিয়ে লেখ। [য. বো, ‘২০]
উত্তরঃ বর্তমান আধুনিক সভ্যতায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজের অনেক ক্ষেত্র আছে। যেমন- কয়লা খনি, নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর, ভূমিকম্প বা দুর্যোগপূর্ণ এলাকা, যুদ্ধক্ষেত্রে বোমা নিস্ক্রিয়করণ, তুমি মাইন শনাক্তকরণ, কলকারখানার অগ্নিসংযোগস্থল থেকে মানুষকে নিরাপদে – সরিয়ে আনা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে মানুষের পক্ষে যে কাজ করা সম্ভব নয় তাই করে যন্ত্র তথা রোবট। রোবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রোগ্রাম অনুসারে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের সব কাজ সম্পন্ন করতে পারে।
প্রশ্ন ৯। “যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে” ব্যাখ্যা কর। [চ. বো. ১৬]
উত্তরঃ তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে অনেক যন্ত্র আবিষ্কার হয়েছে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে। এমনই একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র হলো রোবট, যা অত্যন্ত দ্রুত, ক্লান্তিহীন এবং নিখুঁত কর্মক্ষম স্বয়ংক্রিয় আধুনিক যন্ত্র। নির্দিষ্ট কাজের জন্য তৈরি যন্ত্র বা রোবটে কোনো সমস্যার কী ধরনের সমাধান করতে হবে তার সম্ভাব্য সকল সমাধান প্রোগ্রাম আকারে দেওয়া থাকে। এই প্রোগ্রাম অনুযায়ী যন্ত্র বা রোবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে। প্রোগ্রামের এই কোনো কিছু করা সম্ভব হয় না।
প্রশ্ন ১০। রোবট একটি প্রোগ্রাম কন্ট্রোল ডিভাইস- ব্যাখ্যা কর। [আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা।]
উত্তরঃ রোবট সাধারণত একটি ইলেকট্রো-যান্ত্রিক ব্যবস্থা যার কাজকর্ম, অবয়ব ও চলাফেরা সবই নিয়ন্ত্রিত। রোবট হতে পারে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়, আধা-স্বয়ংক্রিয়, রি-প্রোগ্রামেবল অথবা মানব নিয়ন্ত্রিত। রোবট তার স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রাম অনুসারে সকল কাজ করে থাকে। তাই রোবট একটি প্রেগ্রাম কন্ট্রোল ডিভাইস।
প্রশ্ন ১১। “ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়” ব্যাখ্যা কর। [মা. বো, ‘১৭: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজ।]
উত্তরঃ রোবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রোগ্রামের অনুসারে সকল কাজ সম্পন্ন করে। ভূমিকম্প বা দুর্যোগপ্রবণ এলাকা যেখানে মানুষের পক্ষে পৌঁছানো অসম্ভব সেখানে রোবট ব্যবহৃত হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধযানে ড্রাইভারের বিকল্প হিসেবে, কলকারখানায় অগ্নিসংযোগস্থলে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনার কাজে রোবট ব্যবহার হয়। তাই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়।
ক্রায়োসার্জারি
প্রশ্ন ১২। “ন্যূনতম ধকল সহিষ্ণু শল্যচিকিৎসা পদ্ধতিটি” ব্যাখ্যা কর। [চ. বো. ১৯]
উত্তরঃ ন্যূনতম ধকল সহিষ্ণু শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি হলো ক্রায়োসার্জারি। এটি এমন এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি, যা অত্যাধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগের মাধ্যমে ত্বকের অস্বাভাবিক বা অপ্রত্যাশিত রোগাক্রান্ত টিস্যু/ত্বক কোষ ধ্বংস করার কাজে ব্যবহৃত হয়। ক্রায়োসার্জারি অতিরিক্ত শৈত্য তাপমাত্রায় (- 41°℃) রোগাক্রান্ত সেলগুলোকে ধ্বংস করার কাজ করে। এ চিকিৎসা পদ্ধতিতে কোনো জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, ব্যথা, রক্তপাত অথবা অপারেশনজনিত কাটা-ছেঁড়ার কোনো জটিলতা নেই।
প্রশ্ন ১৩। ক্রায়োসার্জারি চিকিৎসা পদ্ধতিতে চিকিৎসকদের প্রযুক্তির কোন বিষয়ে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ নিতে হয়? [বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা]
উত্তরঃ ক্রায়োসার্জারি চিকিৎসা পদ্ধতিতে চিকিৎসকদের অভিজ্ঞ করে তুলতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বিষয়ে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। বাস্তব নয়, তবে বাড়বের ধারণা সৃষ্টি করত সক্ষম এমন কল্পনা নির্ভর বিষয় অনুভব করার ত্রিমাত্রিক উপস্থাপনই হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। এ পদ্ধতিতে কম্পউটার সিম্যুলেশন ব্যবহর করে চিকিৎসকদের ক্রায়োসার্জারি চিকিৎসা পরিচালনার বিভিন্ন কৌশল দেখানো হয়। এর ফলে চিকিৎসকরা সহজে ও সুবিধাজনক উপায়ে বাস্তবে অপারেশন থিয়েটারে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
প্রশ্ন ১৪। “রক্তপাতবিহীন টিউমার অপারেশন সম্ভব”- বুঝিয়ে লিখ। [ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর]
উত্তরঃ ক্রায়োসার্জারি এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি, যা অত্যধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগের মাধ্যমে ত্বকের অস্বাভাবিক বা অপ্রত্যাশিত রোগাক্রান্ত টিস্যু/ত্বক কোষ ধ্বংস করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এ প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত কম তাপমাত্রায় আক্রান্ত টিস্যুতে ক্রায়োপ্রোব এর মাধ্যমে তরল নাইট্রোজেন প্রয়োগ করা হয়, যাতে কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। এ পদ্ধতি (ক্রায়োসার্জারি) আক্রান্ত স্থানের আশেপাশের টিস্যুর কোনো ধরনের ক্ষতি করে না এবং রক্তপাতও হয় না। তাই বলা যায়, ‘ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব’।
মহাকাশ অভিযান
প্রশ্ন ১৫। জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটকে পৃথিবী থেকে আকাশে এক জায়গায় স্থির বলে মনে হয় কেন? [সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজ, গাজীপুর।]
উত্তরঃ জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ৩৪,০০০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর ঘূর্ণনের সাথে মিল রেখে হুবহু একইগতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর গতি ও জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটের গতি একই হওয়ায় এই স্যাটেলাইটকে পৃথিবী থেকে আকাশে এক জায়গায় স্থির হয়ে আছে বলে মনে হয়।
বায়োমেট্রিক্স
প্রশ্ন ১৬। “প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণ করা যায়”- ব্যাখ্যা কর। [চ. বো, ‘২৩; ব. বো. ১৭]
উত্তরঃ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তি হলো বায়োমেট্রিক্স। মানুষের দৈহিক গঠন বা আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিমাপের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তিই হলো বায়োমেট্রিক্স। দৈহিক গঠন বা শরীরবৃত্তীয় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিগুলো হলো- ফিঙ্গারপ্রিন্ট, হ্যান্ড জিওমেট্রি, আইরিশ স্ক্যানিং, ফেস রিকগনিশন ও ডিএনএ টেস্ট। অন্যদিকে | আচরণগত পদ্ধতিগুলো হলো- কিবোর্ড টাইপিং গতি যাচাইকরণ, সিগনেচার যাচাইকরণ ও কণ্ঠস্বর যাচাইকরণ। এ. প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে সহজেই অদ্বিতীয়ভাবে ব্যক্তি শনাক্ত করা যায়।
প্রশ্ন ১৭। আচরণিক ডেটা বলতে কী বুঝায়? [ঢা. বো, ‘২৩; কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ]
উত্তরঃ মানুষের আচারণগত বৈশিষ্ট্য পরিমাপের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তিই আচরণিক ডেটা বা আচরণগত বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি। একজন মানুষের সাথে অন্য মানুষের আচরণ বৈশিষ্ট্য কখনোই একরকম হবে না। ফলে এই বৈশিষ্ট্য দ্বারা পরস্পরকে আলাদাভাবে শনাক্ত করা যায়। যেমন-
১. কণ্ঠস্বর যাচাইকরণ।
২. হাতে করা স্বাক্ষর যাচাইকরণ।
৩. কীবোর্ডের টাইপিং গতি যাচাইকরণ।
প্রশ্ন ১৮। আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণের পদ্ধতি বুঝিয়ে লেখ। [সি. বো, ‘১৯]
উত্তরঃ আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তি শনাক্তকরণের পদ্ধতি হলো বায়োমেট্রিক্স। মানুষের দৈহিক গঠন বা আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিমাপের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তিই হলো বায়োমেট্রিক্স। আচরণগত বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে- কিবোর্ড টাইপিং গতি যাচাইকরণ, হাতেকরা স্বাক্ষর যাচাইকরণ এবং কণ্ঠস্বর যাচাইকরণ। এসব বৈশিষ্ট্যগুলোর সাহায্যে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করা যায়।
প্রশ্ন ১৯। শনাক্তকরণে সফলতার হার সবচেয়ে বেশি যে পদ্ধতিতে সেটি ব্যাখ্যা কর। [হলি ক্রস কলেজ, ঢাকা।]
উত্তরঃ শনাক্তকরণের সফলতার হার সবচেয়ে বেশি বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির DNA টেস্টিং। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তিকে অত্যন্ত নিখুঁত ও প্রশ্নাতীতভাবে শনাক্ত করা যায়। মানব শরীরের যেকোনো উপাদান যেমন- রক্ত, চুল, আঙুলের নখ, মুখের লালা হা ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর এগুলোর গঠন প্রকৃা শনাক্তের দ্বারা ম্যাপ বা ব্লু প্রিন্ট বায়োলজিক্যাল ডেটাবেজ সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীকালে নমুনা নিয়ে পূর্ববর্তী ডেটার সাথে মিলিয়ে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করা যায়।
বায়োইনফরমেটিক্স
প্রশ্ন ২০। বায়োইনফরম্যাটিক্স-এ ব্যবহৃত ডেটা কী? ব্যাখ্যা কর। [য. বো. ‘১৯]
উত্তরঃ বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত ডেটাসমূহ হলো- ডিএনএ, জিন, অ্যামিনো এসিড এবং নিউক্লিক এসিড। এসব ডেটা থেকে জীববিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণা ও সমস্যাদি উদঘাটনের জন্য ফলিত গণিত, তথ্যবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, কম্পিউটার বিজ্ঞান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রসায়ন ও জৈব রসায়ন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি জৈব ডেটা বিশ্লেষণের টুলস বা উপাদান কোনো রীতিসিদ্ধ পদ্ধতি নয়।
প্রশ্ন ২১। বায়োইনফরমেটিকস বলতে কী বুঝ? [বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা।]
উত্তরঃ বায়োইনফরমেটিকস হলো জীববিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স, ইনফরমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত এবং পরিসংখ্যানের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিষয় যা জীববিজ্ঞানের বিশাল পরিমাণ ডেটা সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং সঠিকভাবে প্রক্রিয়া করে সেগুলো ব্যাখ্যা করে। অন্যভাবে, কম্পিউটার ও পরিসংখ্যান কৌশল ব্যবহার করে জৈব তথ্য বিশ্লেষণ করার প্রক্রিয়া, তথা কম্পিউটার ডেটাবেজ এবং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে জৈব গবেষণার ক্ষেত্রে যে উন্নত আধুনিক পদ্ধতি জৈব গবেষণার কাজকে ত্বরান্বিত করে তাকেই বায়োইনফরমেটিকস বলে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
প্রশ্ন ২২। কোন প্রযুক্তিতে সারা বছর আমের ফলন সম্ভব? ব্যাখ্যা কর। [দি, বো. ‘২৩]
উত্তরঃ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তিতে সারা বছর আমের ফলন পাওয়া সম্ভব। জীবদেহে জীনোমকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজিয়ে কিংবা একাধিক জীবের জীনোমকে জোড়া লাগিয়ে নতুন জীবকোষ সৃষ্টির কৌশলই হলো জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং। কোনো উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন করতে চাইলে উক্ত উদ্ভিদের জিনোমের কোনো একটি জিনকে পরিবর্তন করে দিতে হয়। যেহেতু জিনগুলো আসলে ডিএনএ’র একটি অংশ। তাই একটা জিনকে পরিবর্তন করতে হলে ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ’র সেই অংশটুকু কেটে আলাদা করে অন্য কোনো প্রাণী বা ব্যাকটেরিয়া থেকে আরেকটি জিন কেটে এনে সেখানে লাগিয়ে দিতে হয়। এর ফলে একটি নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কাঙ্ক্ষিত উদ্ভিদের সৃষ্টি হয়। একই প্রক্রিয়ায় সারা বছর ফলন দেওয়া উপযোগী আমের জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব।
প্রশ্ন ২৩। “জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এক সাথে সম্পর্কিত”- ব্যাখ্যা কর। [নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ]
উত্তরঃ জীবদেহে জিনোমকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজিয়ে কিংবা একাধিক জীবের জিনোমকে জোড়া লাগিয়ে নতুন জীবকোষ সৃষ্টির কৌশলই হলো জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফলে উদ্ভিদ ও প্রাণীর জিনোমে যে পরিবর্তন হয় তার ফলে সৃষ্টি হয় উন্নত প্রজাতির জীব। উদ্ভাবিত এসব জীব হয় উচ্চ ফলনশীল এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। আবার নতুন প্রজাতির প্রাণীগুলো অধিক দুধ ও মাংস প্রদানে সক্ষম হয়। যা বিশ্বব্যাপী মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই বলা যায় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা একসাথে সম্পর্কিত।
প্রশ্ন ২৪। তথ্য প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতায় ডায়াবেটিস রোগীরা উপকৃত হচ্ছে – [ব্যাখ্যা কর। সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজ, গাজীপুর।]
উত্তরঃ তথ্য প্রযুক্তির একটি ক্ষেত্র হলো জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং। এ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবের এককোষ থেকে অন্য জীবে স্থানান্তর করে রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তির মাধ্যমে মানব দেহের জন্য ইনসুলিন তৈরি হয় যা ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি শরীরে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। সুতরাং বলা যায় তথ্য প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতায় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডায়াবেটিস রোগীরা উপকৃত হচ্ছে।
ন্যানোটেকনোলজি
প্রশ্ন ২৫। আগামী বিশ্ব হবে ন্যানোটেকনোলজির বিশ্ব ব্যাখ্যা কর। [বি. বো. ‘২৩; সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম: ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, যশোর।]
উত্তরঃ ন্যানোটেকনোলজি অণু-পরমাণু পর্যায়ের অতিক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম যন্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বৃহৎ স্কেলে পণ্যোৎপাদন সম্ভব হচ্ছে এবং উৎপাদিত পণ্য আকারে সূক্ষ্ম ও ছোট হলেও মাতান মজবুত, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, টেকসই ও হালকা হয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আগামীতে দূরারোগ্য ব্যাধি হতে মুক্তি, প্রতিরক্ষায় ন্যানো রোবট, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, বিশ্বব্যাপী বৃহৎ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, কার্যকরি ও সস্তায় শক্তি উৎপাদনসহ পানি ও বায়ু দূষণ কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তাই বলা যায়, আগামী বিশ্ব হবে ন্যানোটেকনোলজির বিশ্ব।
প্রশ্ন ২৬। আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর। [ঢা. বো. ‘১৭; শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ, ময়মনসিংহ।]
উত্তরঃ আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি হলো ন্যানোটেকনোলজি। যখন কোনো একটা বস্তুর কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য কোনো বিশেষ প্রযুক্তি বা যন্ত্র ব্যবহার করে অণু বা পরমাণুগুলোকে ন্যানোমিটার স্কেলে বা ন্যানো পার্টিকেল রূপে পরিবর্তন করা হয় তখন সেই প্রযুক্তিকে ন্যানো টেকনোলজি বলে। এ প্রযুক্তির প্রধান সুবিধা হচ্ছে এর মাধ্যমে কোনো পদার্থের অণু-পরমাণুকে ইচ্ছামতো সাজিয়ে কাঙ্ক্ষিত রূপ দেওয়া যায়। বর্তমানে জিন প্রকৌশল, তড়িৎ প্রকৌশল, যন্ত্র প্রকৌশল ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়।